প্রবন্ধ রচনাঃ আধুনিক তথ্য প্রযুক্তি ও বাংলাদেশ ২০২৪
সূচনা: শিল্প বিপ্লবের পর বাংলাদেশের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ এবং আলোচ্য বিষয় হলো তথ্য প্রযুক্তি। তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি ব্যবহার করে পৃথিবীতে ঘটছে অভূতপূর্ণ উন্নতি। এবং এই উন্নতির ফলে সমগ্র বিশ্ব “গ্লোবাল ভিলেজ” এ পরিণত হয়েছে। নিয়মিত তথ্য প্রযুক্তির মাধ্যমে অসাধ্যকে সাধন করে মানুষ নতুন নতুন নজির তৈরি করছে। বর্তমানে যে দেশ তথ্যপ্রযুক্তিতে যত বেশি এগিয়ে, তাদের সামগ্রিক উন্নতি ও তত বেশি।
একবিংশ শতাব্দীর চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করতে বাড়াতে হবে জ্ঞান ও তথ্য প্রযুক্তির সর্বোচ্চ ব্যবহার। শিল্প ও বাণিজ্যের উন্নয়নের একমাত্র হাতিয়ার হল তথ্য প্রযুক্তি। তবে বর্তমানে শুধু শিল্প ও বাণিজ্যের উন্নয়নে তথ্যপ্রযুক্তি সীমাবদ্ধ নেই। দৈনন্দিন জীবন যাতে তথ্য প্রযুক্তি রয়েছে ব্যাপক ভূমিকা।
সূচিপত্র
এছাড়াও পড়ুন: সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের উপস্থাপনা নমুনা, ছন্দ, স্ক্রিপ্ট ও pdf
তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি কী?
“তথ্য” বলতে সাধারণত পরীক্ষা, অনুসন্ধান, আলোচনা, গবেষণা, প্রকৃত ব্যাপার অনুসন্ধান, এবং তদন্ত করাকে বোঝানো হয়ে থাকে। এবং “যোগাযোগ” শব্দের অর্থ হল মিলন, সংগঠন, ঐক্য, সামঞ্জস্য। তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি কি এর উত্তর সংক্ষেপে হল “তথ্য সংরক্ষণ, ব্যবস্থাপনা, তথ্য প্রক্রিয়াকরণ এবং বিতরণের জন্য ব্যবহৃত পদ্ধতি বা প্রক্রিয়া”। তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির সাথে ঘনিষ্ঠ ভাবে জুড়ে রয়েছে কম্পিউটার, মাইক্রো ইলেকট্রনিক্স, টেলিকমিউনিকেশন ইত্যাদি। আর ‘প্রযুক্তিবিদ্যা’ বলতে বোঝায়, বিভিন্ন শিল্পে বিজ্ঞানের নীতিগুলোর বিশেষভাবে প্রয়োগ।
তথ্য প্রযুক্তি ও বর্তমান বাংলাদেশ
গত দুই বছরে বিশ্বজুড়ে যে অভাবনীয় কল্যাণ সাধিত হয়েছে তার মূলে ছিল তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি। সময় এবং দূরত্ব জয় করার পাশাপাশি তথ্য প্রযুক্তি বিশ্বকে এনে দিয়েছে হাতের মুঠোয়। তথ্য প্রযুক্তির এই জীয়নকাঠির ছোঁয়ায় বর্তমান বাংলাদেশ ও এগিয়ে যাচ্ছে দুর্বার গতিতে। বর্তমানে গ্রাম গঞ্জ থেকে রাজধানী সবখানেই রয়েছে তথ্য প্রযুক্তির ছোয়া। তথ্য প্রযুক্তির প্রতি সবথেকে বেশি আগ্রহ প্রকাশ করছে তরুণ প্রজন্ম।
তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির গুরুত্ব
তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির গুরুত্ব কতটুকু তা আমরা প্রতিদিনের জীবনযাত্রার দিকে খেয়াল করলেই বুঝতে পারি। অর্থনৈতিক উন্নয়ন, সম্ভাবনাময় সফটওয়্যার শিল্প, কর্মসংস্থান সৃষ্টিতে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি, টেলিযোগাযোগ ব্যবস্থা ও মানবসম্পদ উন্নয়ন, ব্যবসা-বাণিজ্য এবং অর্থনীতিকে সচল রাখা, দক্ষ সরকার ব্যবস্থা গঠন ইত্যাদি সব ক্ষেত্রেই রয়েছে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির বিস্তৃত ভূমিকা।
তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির গুরুত্ব উপলব্ধি করে বাংলাদেশে গড়ে উঠেছে প্রায় ৭-৮ হাজার তথ্যপ্রযুক্তি প্রশিক্ষণ কেন্দ্র। বাংলাদেশের প্রায় ১,০০০ হার্ডওয়ার শোরুম রয়েছে যার মধ্যে ৫০০ হার্ডওয়ার শো – রুম ঢাকায় অবস্থিত। বাংলাদেশের সফটওয়্যার প্রতিষ্ঠান সংখ্যা ও প্রায় ১০০ টি। জীবনযাত্রায় পরিবর্তন আনতে তথ্য প্রযুক্তি ব্যবহার দিন দিন বেড়েই চলেছে।
বাংলাদেশে আধুনিক তথ্য প্রযুক্তি
তথ্যপ্রযুক্তি ছাড়া একুশ শতকের জীবন ধারা চিন্তা করা যায় না। নগরে আকাশচুম্বী ভবন, সাগরে আধুনিক নৌযান, অফিস আদালতে কম্পিউটার ও ইন্টারনেটের ব্যবহার, কৃষি কাজে তথ্য প্রযুক্তির আধুনিক ব্যবহার যেমন: ট্রাক্টর, অটোমেটিক মেশিন, আধুনিক পদ্ধতিতে জমির সেচ, কোভিদ নলকূপ খনন ও মোটর এর ব্যবহার দেখলেই বোঝা যায় বাংলাদেশ আধুনিক তথ্য প্রযুক্তিতে কতটা এগিয়ে গেছে। চিকিৎসাবিজ্ঞান, কৃষিবিজ্ঞান এবং নতুন শিল্পাঞ্চল উৎপাদনে তথ্য প্রযুক্তির ভূমিকা অনস্বীকার্য।
আধুনিক জীবন ও প্রযুক্তি
আধুনিক তথ্য প্রযুক্তির মাধ্যমে বিভিন্ন ওয়েবসাইটের মাধ্যমে আমরা ঘরে বসে সকল তথ্য পাচ্ছি। বর্তমানে জমি থেকে ফসল তোলার কাজেও তথ্যপ্রযুক্তি ব্যবহৃত হচ্ছে। ডিজিটাল জমি জরিপ জনিত কাজ ঘরে বসে করা যাচ্ছে তথ্য প্রযুক্তির মাধ্যমে। এছাড়া ই-কমার্স, ই লার্নিং, ই-বুকিং ইত্যাদি যাবতীয় সুবিধা ভোগ করা যাচ্ছে তথ্যপ্রযুক্তির উন্নয়নের জন্য। তথ্যপ্রযুক্তির উন্নয়নে দেশে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে আইসিটি ইনকিউবেটর। বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তি অথবা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির আবেদন ফরম পূরণ করা সহ যাবতীয় কাজ করা যাচ্ছে অনলাইনের মাধ্যমে। তাই বলা যায়, আধুনিক জীবন তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি ছাড়া অর্থহীন।
তথ্যপ্রযুক্তির প্রসারে সরকারের পদক্ষেপ
বর্তমান সরকারের নানামুখী পদক্ষেপের ফলে তথ্য প্রযুক্তিতে যোগ হয়েছে নতুন নতুন মাত্রা। বাংলাদেশের তথ্য প্রযুক্তির অবদান বর্তমানে বিশ্বপরিমন্ডলে সুদৃঢ় এবং পরিচিত হচ্ছে। বর্তমান সরকারের নানামুখী অঙ্গীকার এরমধ্যে অন্যতম হলো তথ্য যোগাযোগ প্রযুক্তির প্রসারতা বৃদ্ধি করা। ইতোমধ্যে বাংলাদেশ সরকার তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তিতে নতুন মাত্রা যোগ করে মানবসম্পদ উন্নয়ন করতে সমর্থ হয়েছে। বাংলাদেশ সরকার তথ্য প্রযুক্তির প্রসারে যেসব নতুন পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে সেগুলো হল:
- সারাদেশে এমনকি উপজেলা পর্যায়ে ইন্টারনেট পৌঁছে দেওয়ার অঙ্গীকার ছিল বর্তমান বাংলাদেশ সরকারের। তারা দেশের অভ্যন্তরীণ যোগাযোগ প্রযুক্তির উন্নয়ন করে সারা দেশকে ডিজিটাল টেলিফোনের আওতায় নিয়ে আসতে সমর্থ হয়েছেন। বর্তমানে প্রায় প্রতিটি জেলায় সর্বোচ্চ গতিতে ইন্টারনেট ব্যবহার করা যাচ্ছে।
- “জাতীয় তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি নীতিমালা” বর্তমান সরকারের অন্যতম লক্ষ্য। এ লক্ষ্য বাস্তবায়নে রাজধানী ঢাকার কাওরানবাজার বাজারে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে আইসিটি ইনকিউবেটর। প্রায় সত্তর হাজার বর্গফুট আয়তন জুড়ে প্রতিষ্ঠানটি প্রতিষ্ঠিত হয়েছে।
- ইতোমধ্যে বাংলাদেশ সরকার বিদেশে সফটওয়্যার ও তথ্য প্রযুক্তির পণ্য বাজারজাত করা সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছেন। এ লক্ষ্য বাস্তবায়নে ,”আইসিটি বিজনেস প্রমোশন সেন্টার প্রতিষ্ঠিত হয়েছে।
- বাংলাদেশ সরকার ইতোমধ্যে ঢাকার কালিয়াকৈর এলাকায় হাইটেক পার্ক স্থাপনের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছে। এই প্রতিষ্ঠানটি তৈরি করতে ২৬৫ একর ভূমির প্রয়োজন হবে।
অর্থনৈতিক উন্নয়নে তথ্য প্রযুক্তির ভূমিকা কি কি?
বর্তমানে তরুণ প্রজন্ম তথ্যপ্রযুক্তিকে মূলধন হিসেবে ব্যবহার করছে। তথ্যপ্রযুক্তিকে কাজে লাগিয়ে মেধা এবং শ্রম ব্যবহারের মাধ্যমে সমগ্র বিশ্ব দুর্বার গতিতে এগিয়ে যাচ্ছে। বাংলাদেশে কম্পিউটার সফটওয়্যার তৈরির প্রবণতা বেড়েছে এবং বাংলাদেশ সফটওয়্যার রপ্তানি করছে পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে।
সর্বশেষ ২০১৭-১৮ তথ্য অনুযায়ী, ২০১৭-১৮ অর্থবছরে রপ্তানিকৃত সফটওয়্যার এর মূল্য ছিল ৮০০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার। তবে অর্থনৈতিক উন্নয়নের তথ্য প্রযুক্তির ভূমিকা থাকলেও এর রয়েছে নানা ধরনের সংকীর্ণতা এবং প্রতিকূলতা। আশা করছি প্রতিকূলতা গুলো কাটিয়ে উঠতে পারলেই বাংলাদেশ তথ্যপ্রযুক্তির সর্বোচ্চ সুবিধা ভোগ করতে পারবে। অর্থনৈতিক উন্নয়নের তথ্য প্রযুক্তির ভূমিকা গুলোর নিচে সংক্ষেপে আলোচনা করা হলো:
কর্মসংস্থান সৃষ্টিতে তথ্য প্রযুক্তির ভূমিকা
বর্তমানে ইন্টারনেট ভিত্তিক বিভিন্ন কাজ যেমন, এসইও অপটিমাইজিং, ওয়েবসাইট ডেভেলপমেন্ট, ডাটা এন্ট্রি, কম্পিউটার অপারেটিং, কনটেন্ট রাইটিং, গ্রাফিক ডিজাইনিং, ওয়েব সফটওয়্যার ডেভেলপমেন্ট ইত্যাদি আরও বিভিন্ন ধরনের নতুন নতুন কর্মসংস্থান সৃষ্টি করছে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি। বাংলাদেশের সর্ববৃহৎ ১০০ টি সফটওয়্যার ফার্ম এর মধ্যে কমপক্ষে ১৬ টি সফটওয়্যার ফার্ম তাদের সফটওয়্যার দেশের বাইরে রপ্তানি করছে। কম্পিউটার ভিত্তিক মাল্টিমিডিয়া দিন দিন এগিয়ে যাবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
জাতীয় তথ্য অবকাঠামো গঠন
বিশ্বব্যাপী তথ্য প্রযুক্তি বিপ্লবের অংশীদার হতে হলে জাতীয় তথ্য অবকাঠামো গঠন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। তথ্য বৈষম্যের শিকার হওয়া থেকে বাঁচতে হলে জাতীয় তথ্য অবকাঠামো গঠন গুরুত্বপূর্ণ। বাজার অর্থনীতি, শিক্ষা ও স্বাস্থ্য খাতে সুবিধা লাভ ইত্যাদি বর্ধিত আকারে পাওয়ার জন্য জাতীয় তথ্য অবকাঠামো গঠন খুবই গুরুত্বপূর্ণ। বাংলাদেশের তথ্য প্রযুক্তি ভিত্তিক নতুন অর্থনীতি গড়ে উঠছে। এই অর্থনীতির অংশীদার হওয়ার জন্য জাতীয় তথ্য অবকাঠামো গঠন গুরুত্বপূর্ণ।
তথ্য প্রযুক্তিভিত্তিক ব্যাংকিং ব্যবস্থা চালু
দেশের অর্থনৈতিক প্রাণশক্তি বর্ধিত করার জন্য তথ্য প্রযুক্তি ভিত্তিক ব্যাংকিং ব্যবস্থার কোন তুলনা নেই। ব্যাংকিং খাতে তথ্যপ্রযুক্তি যাবতীয় ব্যবহার যুগোপযোগী হওয়ার পাশাপাশি সাধারণ মানুষের জন্য এটি খুবই সুবিধাজনক হয়ে থাকে। তাই ব্যাংকিং ব্যবস্থায় সম্পূর্ণ রূপে তথ্য প্রযুক্তির যোগ করা খুবই গুরুত্বপূর্ণ।
মানবসম্পদ উন্নয়নে তথ্য প্রযুক্তির ভূমিকা
দেশের দারিদ্র দূরীকরণ এবং তথ্যপ্রযুক্তির সামগ্রিক সুবিধা বর্ধিত করার জন্য মানবসম্পদ উন্নয়নের কোন বিকল্প নেই। আমরা সবাই জানি মানব সম্পদ উন্নয়নের ফলে একটি দেশ হতে দারিদ্রতা হ্রাস পায়। তথ্যপ্রযুক্তি ব্যবহার করে মানবসম্পদ উন্নয়নে তথ্য প্রযুক্তির ভূমিকা গুলো হল:
- পাঠ্যপুস্তকে অবশ্যই ইংরেজি শিক্ষাকে প্রাধান্য দিতে হবে। এটিকে এই প্রযুক্তি শিক্ষা হিসেবে বিবেচনা করতে হবে।
- তথ্যপ্রযুক্তির উন্নয়নের জন্য এর বাস্তবভিত্তিক প্রয়োগ খুবই গুরুত্বপূর্ণ। বাস্তব প্রয়োগ ছাড়া তথ্য প্রযুক্তি থেকে সর্বোচ্চ ফল আশা করা যায় না।
টেলিযোগাযোগ ব্যবস্থা উন্নয়ন
বর্তমান বিশ্বে টেলিযোগাযোগ ব্যবস্থা ছাড়া একটা দিনও কল্পনা করা যায় না। তথ্যপ্রযুক্তি উন্নয়নে সব থেকে গুরুত্বপূর্ণ উপাদান হল টেলি যোগাযোগ ব্যবস্থার বিস্তৃত উন্নয়ন। বেশিরভাগ জনগণ টেলিযোগাযোগ ব্যবস্থার আওতায় থাকলেও কিছু কিছু জনগোষ্ঠী এখনো টেলি যোগাযোগ ব্যবস্থার আওতায় আসতে পারেননি। টেলি নেটওয়ার্ক বর্ধিত করার জন্য বার্ষিক লক্ষ্য নির্ধারণ করার পাশাপাশি তা প্রয়োগ করা গুরুত্বপূর্ণ। টেলিযোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়ন ব্যতীত তথ্য প্রযুক্তি সামগ্রিক উন্নয়ন একেবারেই সম্ভব নয়।
তথ্যপ্রযুক্তির মাধ্যমে দক্ষ সরকার ব্যবস্থা গঠন
তথ্যপ্রযুক্তির মাধ্যমে আমাদের জাতীয় উন্নয়ন সাধিত হয়ে থাকে। তথ্য প্রযুক্তির বিস্তীর্ণতা অনেকাংশে নির্ভর করে দেশের সরকার এর উপর। তাই তথ্য প্রযুক্তির মাধ্যমে দক্ষ সরকার ব্যবস্থা গড়ে তুলতে হবে। এবং সরকার সাধারণ জনগণের উদ্দেশ্যে সরকারি বিভিন্ন ওয়েবসাইটে বিনামূল্যে প্রবেশাধিকার নিশ্চিত করতে পারেন। এতে করে ইন্টারনেট ভিত্তিক তথ্য ব্যবস্থা বহুগুণ বেড়ে যাবে। সর্বোপরি, তথ্যপ্রযুক্তির পৃষ্ঠপোষকতা প্রতিটি দেশের সরকার প্রধানের জন্য গুরুত্বপূর্ণ।
তথ্য প্রযুক্তি উন্নয়নে করণীয় বিষয় সমূহ:
তথ্যপ্রযুক্তি উন্নয়নে জনসাধারণের কয়েকটি বিষয় করণীয় রয়েছে। নিচে সেগুলো আলোকপাত করা হলো:
- গবেষণার ক্ষেত্রে তথ্য প্রযুক্তির ব্যবহার বাড়িয়ে দিতে হবে,
- শিক্ষামূলক বিনোদনে তথ্য প্রযুক্তির ব্যবহার বাড়াতে হবে,
- নেতিবাচক তথ্য প্রযুক্তির ব্যবহার থেকে পুরোপুরি দূরে থাকতে হবে,
- শিক্ষার প্রতিটি ক্ষেত্রে তথ্য প্রযুক্তির ব্যাপকতা বাড়াতে হবে,
- চিকিৎসা ক্ষেত্রে শতভাগ তথ্য প্রযুক্তির ব্যবহার আনয়ন করতে হবে,
- প্রতিটি সেক্টরেরতথ্য প্রযুক্তির বাস্তব প্রয়োগ করতে হবে।
শিক্ষা ও চিকিৎসা ক্ষেত্রে তথ্য প্রযুক্তির ব্যবহার
চিকিৎসা বিজ্ঞানে তথ্য প্রযুক্তি ব্যবহার করলে খুব দ্রুত এবং নির্ভুল ফলাফল পাওয়া যায়। শিক্ষাক্ষেত্রেও পাঠ্যপুস্তক এর পাশাপাশি শিক্ষার্থী যদি এর বাস্তব প্রয়োগ দেখতে পারে তাহলে এটি তার মনে চিরস্থায়ী হয়। শিক্ষাবৃত্তিক বিভিন্ন কার্যক্রম রেডিও অথবা টেলিভিশনের মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের মাঝে ছড়ানো যেতে পারে। তবে তথ্যপ্রযুক্তি ব্যবহার করে দারিদ্রতা দূর করতে চাইলে আপনাকে নিয়ম অনুবর্তিতা এবং অধ্যাবসায়ী হতে হবে।
চিকিৎসা ক্ষেত্রে রোগ নির্ণয় এবং নতুন চিকিৎসা পদ্ধতি জানার জন্য বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকগণ তথ্যপ্রযুক্তি সহায়তা নিয়ে থাকেন। এতে করে সঠিক যাচাই-বাছাই করা যায় এবং সেই অনুযায়ী পদক্ষেপ গ্রহণ করা যায়।
বিনোদন ও গবেষণায় তথ্য প্রযুক্তি
বর্তমানে তথ্যপ্রযুক্তি ব্যবহার করে youtube এর মাধ্যমে যখন তখন গান, নাচ, ধর্ম বিষয়ক ভিডিও, বিভিন্ন সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, তর্ক বিতর্ক অনুষ্ঠান দেখা যায়। বিদেশে হচ্ছে এমন কোন ঘটনা আমরা সহজে ভেসে বসে জানতে পারি তথ্যপ্রযুক্তির কল্যানে। সাহিত্য ও সংস্কৃতির বৈচিত্র্যময় এ যুগে তথ্যপ্রযুক্তি ছাড়া এবং ইন্টারনেট ব্যতীত এক মিনিটও কল্পনা করা যায় না।
গবেষণা ও উচ্চ শিক্ষার ক্ষেত্রেও তথ্য প্রযুক্তি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখে চলেছে। গবেষণা ভিত্তিক বিভিন্ন কর্ম সম্পাদনে অনেক আগে থেকেই মানুষ তথ্যপ্রযুক্তি ব্যবহার করার চেষ্টা করছে।
তথ্য প্রযুক্তির নেতিবাচক প্রভাব
তথ্যপ্রযুক্তির নেতিবাচক প্রভাব গুলো হল:
- দেশে দেশে জাতিতে জাতিতে হানাহানি বাড়ছে,
- সার্ভার সিকিউরিটিজনিত সমস্যা তৈরি হচ্ছে,
- বেশিরভাগ ক্ষেত্রে মানুষ অপসংস্কৃতিতে মেতে উঠছে,
- অনেক সময় আসল পরিচয় ঢেকে রেখে মানুষ মিথ্যা সংবাদ প্রচার করছে,
- পর্নোগ্রাফির প্রতি আকৃষ্টতা বেড়ে চলেছে।
উপসংহার:
সমগ্র পৃথিবী জুড়ে তথ্যপ্রযুক্তির ক্রমাগত ব্যবহার দিন দিন বেড়েই চলেছে। ইন্টারনেট এবং প্রযুক্তি ব্যবহার করে মানুষ ভার্চুয়াল যোগাযোগ ব্যবস্থা করে তুলছে। ইন্টারনেটের সুফল এর ফলে তথ্যপ্রযুক্তি সম্পূর্ণ কার্যক্রম মানুষের হাতের মুঠোয় চলে এসেছে।