আর এস খতিয়ান বের করার নিয়ম
প্রযুক্তির উন্নয়নের ফলে আর এস খতিয়ান অনলাইনের মাধ্যমে চেক করা যায়। ভূমি মন্ত্রণালয়ের অফিসিয়াল ওয়েবসাইট ব্যবহার করে ভূমি সংক্রান্ত ঝামেলা নিষ্পত্তির জন্য আর এস খতিয়ান বের করা যায়।
যেকোনো ভূমি যদি চূড়ান্তভাবে সম্পূর্ণ হওয়ার পরও কিছু ত্রুটি-বিচ্যুতি সংঘটিত হতে পারে। সরকারি ডাটাবেজে ভূমি সংক্রান্ত যাবতীয় তথ্যের ভিতরে জায়গার রেকর্ড সংরক্ষিত থাকে। তাই যেকোনো সময় কিছু গুরুত্বপূর্ণ ডকুমেন্ট ব্যবহার করে সরকারি ওয়েবসাইট থেকে আর এস খতিয়ান বের করা সম্ভব।
আজকের এই পোস্টে আমরা খুব সহজে আর এস খতিয়ান বের করার নিয়ম সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করব। ভূমি সংক্রান্ত যাবতীয় তথ্য নিজের দখলে রাখার জন্য কিভাবে আরএস খতিয়ান বের করবেন তা নিচে আলোচনা করা হলো:
সূচিপত্র
আর এস খতিয়ান কাকে বলে
চূড়ান্তভাবে জমি জরিপ করা হয়ে গেলেও কিছু সময় ত্রুটি সংশোধন করার প্রয়োজন হয়। কারণ অনেক সময় যে ব্যক্তি জমি জরিপ করার কাজে নিয়োজিত থাকেন তিনি সরজমিনে তদন্ত করেন না। জমি সংক্রান্ত যাবতীয় ভুল ত্রুটি সংশোধনের জন্য পরবর্তীতে পুনরায় যে জরিপ করা হয় তাকে আর এস খতিয়ান বলে।
এছাড়াও পড়ুন: অনলাইনে জমির নকশা বের করার নিয়ম
পুনরায় জমি জরিপ করার জন্য দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে ভূমি কাজে নিযুক্ত ব্যক্তি কে সরজমিনে মাপ – ঝোক করার মাধ্যমে পুনরায় একটি খতিয়ান প্রস্তুত করতে বলা হয়। পুনরায় যে খতিয়ান প্রস্তুত করা হয় তাকেই আরএস খতিয়ান বলা হয়ে থাকে।
আর এস (RS) খতিয়ান প্রস্তুতির সময় সাধারণত ত্রুটি বিচ্যুতি কম পরিলক্ষিত হয়। এ সময় ভুমি কর্মকর্তারা সরজমিনে উপস্থিত থাকেন। এবং তাদের মাধ্যমে এআরএস খতিয়ান প্রস্তুত হয়।
আর এস খতিয়ান বের করতে কি কি তথ্য লাগবে
আর এস খতিয়ান বের করার জন্য সর্বপ্রথম বিভাগ,জেলা, উপজেলা, গ্রাম, মৌজা, জমির দাগ নাম্বার এবং জমির মালিকের নাম উল্লেখ করতে হবে। যদি আপনি আপনার ছবির আর এস খতিয়ান আগে থেকে জেনে থাকেন তাহলে এ পর্যায়ে সুবিধা হবে।
অনলাইন থেকে জমির খতিয়ান সংক্রান্ত তথ্য মোট চার ভাবে দেখতে পাওয়া যায়। যেসব তথ্য দেখতে পাওয়া যায় তা হল:
- জমির মালিকের নাম,
- জমির মালিকের পিতার নাম,
- জমির খতিয়ান নাম্বার,
- জমির দাগ নম্বর।
আর এস (RS) খতিয়ান চেক করার নিয়ম
আর এস (RS) খতিয়ান চেক করার নিয়ম, Rules for issue of RS certificate সম্পর্কে যারা অনলাইনে জানতে চান তাদের জন্য সংক্ষিপ্ত আকারে আর এস খতিয়ান চেক করার নিয়ম তুলে ধরা হলো। প্রতিটি ধাপে ধাপে আপনি যদি আমাদের নির্দেশনা অনুযায়ী আরএস খতিয়ান চেক করেন তাহলে অবশ্যই আপনার জমির সঠিক তথ্য পাবেন।
ধাপ ১
আর এস খতিয়ান অনলাইন থেকে চেক করার জন্য আপনাকে সরকারি ভূমি সংক্রান্ত ওয়েবসাইট ভিজিট করতে হবে। www.eporcha.gov.bd লিংকে প্রথমে প্রবেশ করার পর আপনি আর এস খতিয়ান সংক্রান্ত যাবতীয় কাজ করতে পারবেন।
ওয়েবসাইটে প্রবেশ করার পর আপনার সামনে “সার্ভে খতিয়ান” নামের একটি অপশন আসবে। সার্ভে খতিয়ান এ ক্লিক করার পর আপনাকে পরবর্তী ধাপগুলো অনুসরণ করতে হবে।
এছাড়াও পড়ুন: খতিয়ান অনুসন্ধান
ধাপ ২
আর এস খতিয়ান অনুসন্ধানের জন্য আপনাকে চিত্রের ন্যায় কয়েকটি অপশন পূরণ করতে হবে।
আর এস খতিয়ান অনুসন্ধানের জন্য পর্যায়ক্রমে বিভাগ, জেলা, উপজেলা ও মৌজা বাছাই করতে হবে। পরবর্তীতে আপনাকে খতিয়ানের নাম্বার বসিয়ে “অনুসন্ধান করুন” বাটনে এ ক্লিক করতে হবে। এখান থেকে আপনি যদি চান “অধিকতর অনুসন্ধান”বাটনে ক্লিক করে জমির দাগ নাম্বার যাচাই করতে পারবেন। তবে আর এস খতিয়ান বের করার জন্য আপনাকে খতিয়ান নাম্বার বসালেই হবে।
আর এস খতিয়ান ডাউনলোড করার নিয়ম
সাধারণত অন্য কারো কাছ থেকে জমি ক্রয় করার পর আমরা জমির মালিকের সত্যতা যাচাই করার জন্য আরএস খতিয়ান অনুসন্ধান করে থাকি। ভূমি মন্ত্রণালয়ের অফিসিয়াল ওয়েবসাইটে ভূমি সংক্রান্ত ডাটাবেজে আপনি আপনার জমির সকল তথ্য পাবেন। এখান থেকে আপনার কাছে যেসব তথ্য চাওয়া হবে এগুলো সঠিকভাবে পূরণ করলে আপনি জমির আর এস খতিয়ান ডাউনলোড করতে পারবেন।
আর এস খতিয়ান চেক সম্পর্কে আমরা ইতোমধ্যে বিস্তারিত আলোচনা করেছি। আর এস খতিয়ান এর তথ্য আপনার সামনে আসলে সেখান থেকে আর এস খতিয়ান ডাউনলোড করার জন্য নিচের দিকে “আবেদন করুন” নামক একটি অপশন আসবে। এই অপশনে ক্লিক করলে আপনার সামনে অন্য একটি পেজ আসবে। এখানে নিচে প্রদত্ত কিছু তথ্য পূরণ করতে হবে। তথ্য গুলো হল:
- জাতীয় পরিচয় পত্রের নাম্বার,
- মোবাইল নাম্বার,
- জন্মতারিখ,
- ইমেইল এড্রেস,
- পূর্ণাঙ্গ ঠিকানা,
- ইংরেজি নাম,
- ক্যাপচা কোড পূরণ করতে হবে,
- টাকা পরিষদের মাধ্যমে নির্বাচন করুন,
- সরকারি যে ফি নির্ধারণ করা থাকবে তা পরিশোধ করতে হবে,
- ফি পরিশোধ করার পর সেখান থেকে “ডাউনলোড” অপশনে ক্লিক করলে সেখান থেকে সার্টিফাইড কপি ডাউনলোড করতে পারবেন।
এছাড়াও পড়ুন: নামজারি ও ই নামজারি চেক করার নিয়ম
অফলাইনে আরএস খতিয়ান বের করা যায়
অনলাইন ছাড়া অফলাইনেও আর এস খতিয়ান বের করা যায়। How to get RS Khatian without online তা জানার জন্য আমাদের নিচের লেখাটুকু সম্পূর্ণ পড়ুন। বাংলাদেশের জনগোষ্ঠী এখনো অনলাইনের ব্যাপারে সচেতন নয়। তাই তারা অফলাইনের মাধ্যমে আর এস খতিয়ান বের করতে চান। অফলাইনের মাধ্যমে আর এস খতিয়ান বের করার জন্য আপনাকে যেতে হবে ভূমি অফিসে। ভূমি অফিসে যাওয়ার আগে আপনার কাছে কিছু গুরুত্বপূর্ণ ডকুমেন্ট থাকতে হবে। সেগুলো হলো:
- জমির দাগ নাম্বার,
- জমির খতিয়ান নাম্বার এবং মৌজা নাম্বার।
আমাদের শেষ কথা
আর এস খতিয়ান বের করার জন্য আপনি অনলাইন এবং অফলাইন দুটো অপশন ই ব্যবহার করতে পারেন। তবে ঘরে বসে আরএস খতিয়ান বের করার জন্য অনলাইন সব থেকে ভালো উপায়। আজকের এই পোস্টে আমরা আর এস খতিয়ান বের করার নিয়ম সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করেছি। আর্টিকেলটি ভালো লাগলে আমাদের ওয়েবসাইটের সাথেই থাকুন।
বহুল জিজ্ঞাসিত প্রশ্নগুলি
১) অনলাইনে খতিয়ান কিভাবে দেখব?
উঃ অনলাইনে খতিয়ান বের করার জন্য eporcha.gov.bd ওয়েবসাইট ভিজিট করতে হবে।
২) জমির পর্চা বের করতে কত টাকা লাগে?
উঃ জমির পর্চা বের করতে ১০০ টাকা খরচ হয়।
৩) কত বছর পর পর জরিপ করা হয়?
উঃ সাধারণত ৫০ বছর পর পর জরিপ করা হয়।